December 22, 2024, 3:07 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ায় দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ও কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সারওয়ার জাহান বাদশার ফুফাতো ভাই হাসিনুর রহমানকে হত্যার ঘটনায় সেই বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দৌলতপুর থানা পুলিশ জানায় একই এলাকার মজিবর রহমান বয়াতি ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। রবিবার নিহতের স্বজন ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জুব্বার আলী বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় এ মামলা করেন। ঘটনার পরপরই মজিবর বয়াতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মজিবর বয়াতির ছেলে জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
নিহত হাসিনুর রহমান দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ছেলের হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়ে মামলা মীমাংসা করার উদ্যোগ নেয়ার বদলা নিতে হাসিনুর রহমানকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন মজিবর রহমান বয়াতি। হত্যার পর পালিয়ে না গিয়ে পুলিশের হাতে স্বেচ্ছায় ধরা দিতে নিজ গৃহে অবস্থান করছিলেন তিনি।
শনিবার (২৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় জব্বার নামে আরেকজন আহত হন। হাসিনুরকে কুপিয়ে হত্যার পর মজিবর রহমান বয়াতি প্রকাশ্যে স্থানীয় শত শত লোকের সামনে চিৎকার করে বলতে থাকেন, সন্তান হত্যার বদলা নিলাম। তবে পুলিশ সরাসরি সন্তান হত্যাকারীদের পক্ষ নিয়ে মামলা মীমাংসা করার বদলার বিষয়টি স্বীকার না করে বলছে- পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মজিবর রহমান বয়াতি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিশিকান্ত বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মজিবর বয়াতিকে রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় সুত্র জানা যায়, ২০১৯ সালের ঈদুল আজহার দিন তুচ্ছ ঘটনায় মজিবর রহমান বয়াতির ছেলে স্থানীয় পিকেএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আনোয়া কে (১৫) ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আনোয়ারের বাবা মজিবর কয়েকজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার আসামি এবং আসামিদের পরিবারের সদস্যরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন। তদন্তের কয়েক মাস পর একই বছর দৌলতপুর থানা পুলিশ স্কুলছাত্র আনোয়ার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন।
সুত্রগুলো জানায় মামলার বাদী ও বিবাদী দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের হওয়ায় এমপির প্রতিনিধি হিসেবে হাসিনুর রহমান সমঝোতা করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। আপস-মীমাংসার জন্য কয়েক দফায় তিনি দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকও করেন। এটা ক্ষুদ্ধ করে মজিবরকে।
শনিবার সকালে মজিবর একাই হাসিনুরকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়েই ঢাকা থেকে এলাকায় ছুটে আসেন এমপি সারওয়ার জাহান বাদশা। শুধু পূর্বশত্রুতার কারণে নয় এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কারও ইন্ধন রয়েছে কি-না বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
Leave a Reply